বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপি বাংলাদেশের অন্যতম ডানপন্থী দল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার জন্য ১৯ দফা কর্মসূচি পালন করেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ইতিহাস
প্রতিষ্ঠা
জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসলে জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন। জাগদল কে বিএনপির সাথে একীভূত করা হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন এবং পরে দলের চেয়ারম্যান হন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রথম মহাসচিব ছিলেন অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এই দলে বাম পন্থী ও ডান পন্থী মধ্য পন্থী সব ধরনের লোক ছিলেন। ৪৫ শতাংশ সদস্য সুধু নতুন ছিল তা নয় তারা ছিলেন তরুণ। জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টায় রমনা রেস্তেরায় এক সংবাদ সম্বেলনে দল প্রতিষ্ঠা করেন। জিয়াউর রহমান সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে ১৮ জনের নাম এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ওই ১৮ জন সহ ৭৬ জনের সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
দলের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা
| ১. আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান | ৩৯. ক্যাপ্টেন (অব.) সুজাত আলী |
| ২. সদস্য বিচারপতি আবদুস সাত্তার | ৪০.তুষার কান্তি বারবি |
| ৩. মশিউর রহমান যাদু মিয়া | ৪১.. সুনীল গুপ্ত |
| ৪. মোহাম্মদউল্লাহ | ৪২.রেজাউল বারী ডিনা |
| ৫.শাহ আজিজুর রহমান | ৪৩.আনিসুর রহমান |
| ৬.. ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম চৌধুরী | ৪৪. আবুল কাশেম |
| ৭. রসরাজ মন্ডল | ৪৫.মনসুর আলী সরকার |
| ৮.আবদুল মোনেম খান | ৪৬.আবদুল হামিদ চৌধুরী |
| ৯.জামাল উদ্দিন আহমেদ | ৪৭.মনসুর আলী |
| ১০.. ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী | ৪৮. শামসুল হক |
| ১১. মির্জা গোলাম হাফিজ | ৪৯.খন্দকার আবদুল হামিদ |
| ১২.ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক | ৫০.জুলমত আলী খান |
| ১৩.সাইফুর রহমান | ৫১. এডভোকেট নাজমুল হুদা |
| ১৪.. কে এম ওবায়দুর রহমান | ৫২.মাহবুব আহমেদ |
| ১৫.মওদুদ আহমেদ | ৫৩.আবু সাঈদ খান |
| ১৬.শামসুল হুদা চৌধুরী | ৫৪.মোহাম্মদ ইসমাইল |
| ১৭.এনায়েতুল্লাহ্ খান | ৫৫.সিরাজুল হক মন্টু |
| ১৮.এসএ বারী এটি | ৫৬.শাহ বদরুল হক |
| ১৯.ড. আমিনা রহমান | ৫৭.আবদুর রউফ |
| ২০.আবদুর রহমান | ৫৮.মোরাদুজ্জামান |
| ২১.ডা. এম এ মতিন | ৫৯.জহিরুদ্দিন খান |
| ২২. আবদুল আলিম | ৬০.সুলতান আহমেদ চৌধুরী |
| ২৩.ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত | ৬১.শামসুল হুদা |
| ২৪.আনোয়ার হোসেন মঞ্জু | ৬২.সালেহ আহমেদ চৌধুরী |
| ২৫. নুর মোহাম্মদ খান | ৬৩.আফসার আহমেদ সিদ্দিকী |
| ২৬.আবদুল করিম | ৬৪.তরিকুল ইসলাম |
| ২৭. শামসুল বারী | ৬৫.আনোয়ারুল হক চৌধুরী |
| ২৮.মুজিবুর রহমান | ৬৬. মাইনুদ্দিন আহমেদ |
| ২৯.. ডা. ফরিদুল হুদা | ৬৭.এমএ সাত্তার |
| ৩০.শেখ আলী আশরাফ | ৬৮.হাজী জালাল |
| ৩১.আবদুর রহমান বিশ্বাস | ৬৯. আহমদ আলী মন্ডল |
| ৩২.ব্যারিস্টার আবদুল হক | ৭০.শাহেদ আলী |
| ৩৩. ইমরান আলী সরকার | ৭১. আবদুল ওয়াদুদ |
| ৩৪. দেওয়ান সিরাজুল হক | ৭২. শাহ আবদুল হালিম |
| ৩৫.এমদাদুর রহমান | ৭৩.জমির উদ্দিন সরকার |
| ৩৬.এডভোকেট আফসার উদ্দিন | ৭৪.আতাউদ্দিন খান |
| ৩৭.কবীর চৌধুরী | ৭৫. আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী |
| ৩৮.ড. এম আর খান | ৭৬. আহমদ আলী |
বিএনপির প্রথম সরকার গঠন
৩০ শে নভেম্বর ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সরকার ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনের ঘোষণা দেন। তবে কিছু রাজনৈতিক দলের দাবিতে নির্বাচন পিছিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপি ২০৭ টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ ৩৯ টি আসন পেয়ে বিরোধীদল দল হয়। ১৯৮০ সালে বিএনপি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় স্থান্তরিত করে। ২৯ শে মে ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে সফরে গেলে ৩০ মে ভোরে বিপদ্গামি সেনা সদস্যদের হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হন। জিয়াউর রহমানের রাজনিতির ইতিহাস স্বর্ণাক্ষররে লেখা থাকবে তার সততা, উন্নয়ন, ঐক্য, এবং সুসম্পর্কের রাজনীতির জন্য।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রথম সরকার গঠন
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সর্বস্তরের জনতার বিক্ষোভে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রধান বিচারপতি সাহাব্বুদিন আহমেদের নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হ্য।সেই নির্বাচনে সর্বাধিক আসনে জয় লাভ করে। সেই নিওরবাচনের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো গনতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। এই সরকার ৫ বছর দেশ শাসনের পর ক্ষমতা হস্তান্তর করা ছাড়াই নির্বাচন আয়োজন করে। সেই নির্বাচন আওয়ামীলীগ বয়কট করায় আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জয় লাভ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর ২১ বছর পর দলটি ক্ষমতায় আসে এবং প্রধান মন্ত্রী হন শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দ্বিতীয় সরকার গঠন
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ১৯৯১ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত গনতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে একদলীয় নির্বাচনে সরকার গঠন করে। সেই সরকারের মেয়াদ ছিল ৪৫ দিন।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তৃতীয় সরকার গঠন
২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ২১০ আসন নিয়ে চার দলীয় জোট ক্ষমতায় যায়। ২০০৬ সালে এই সরকারের মেয়াদ শেষ হলেও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক রাজনৈতিক সংঘাত। পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে রাষ্ট্র পতি ২০০৭ সালে ১১ জানুয়ারি সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এই সময় থেকে ২ বছর দেশ পরিচালনা করেন ডা. ফকুরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর এই সরকারের নেতৃতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ২৩০ টি আসন পেয়ে আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় আসে।
সাত দলীয় জোট গঠন
১৯৯০ সালে এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বেগম খালেদা জিয়া ৭ দলীয় জোট গঠন করেন। জোট ভুক্ত দল-
১. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
২. জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)
৩. প্রগ্রেসিভ ন্যাশনালিষ্ট পার্টি (পিএনপি)
৫. ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি)
৭. ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)
চারদলীয় জোট গঠন
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোট মিলিত হয়ে চারদলীয় জোট গঠন করে। জোট ভুক্ত দল-
১. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
২. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৩. বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি
৪. ইসলামী ঐক্য জোট
২০ দলীয় জোট গঠন
১৮ ই এপ্রিল ২০১২ সালে বিএনপি ১৯ টি রাজনৈতিক দলের সাথে জোট গঠন করে। জোট ভুক্ত দল-
১. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
২. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
৩. লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)
৪. জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)
৫. বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি – বিজেপি
৬. ইসলামী ঐক্য জোট
৭. খেলাফত মজলিস
৮. জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা
৯. বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি
১০. বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ
১১. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
১২. বাংলাদেশ মুসলিম লিগ-বিএমএল
১৩. ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এনডিপি
১৪. ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি
১৫. বাংলাদেশ লেবার পার্টি
১৬. বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি
১৭. ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি -ন্যাপ ভাসানী
১৮. ডেমোক্র্যাটিক লীগ
১৯. পিপলস লীগ
২০.বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল
বর্তমান নেতৃত্ব
বর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী এবং বিশ্বের ২য় প্রধান মন্ত্রী। ২০০৭ সাল থেকে সাবেক সংসদীয় হুইপ খন্দকার দেলোয়ার হোসেন দলের মহাসচিব এর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১১ সালে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরে মহাসচিব এর দায়িত্ব পান মির্জা ফখরুল ইসলামকে। এবং বর্তমানে তিনি এই দায়িত্ব আছেন।
দলীয় স্লোগান
প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ,
জীবন বাংলাদেশ আমার মরন বাংলাদেশ।
“বাংলাদেশ জিন্দাবাদ”
“শহীদ জিয়া অমর হোক,
বেগম খালেদা জিয়া জিন্দাবাদ
সাংগঠনিক কাঠামো
দলের সাংগঠনিক কাঠামো নিম্নরূপ
১. গ্রাম কাউন্সিল ও গ্রাম নির্বাহী কমিটি
২.শহর/পৌরসভা ওয়ার্ড কাউন্সিল ও শহর/পৌরসভা ওয়ার্ড নির্বাহী কমিটি
৩. ইউনিয়ন কাউন্সিল ও ইউনিয়ন নির্বাহী কমিটি
৪. থানা কাউন্সিল ও থানা নির্বাহী কমিটি
৫.শহর/পৌরসভা কাউন্সিল ও শহর পৌরসভা নির্বাহী কমিটি
৬.জেলা কাউন্সিল ও জেলা নির্বাহী কমিটি
৭. নগর/ওয়ার্ড কাউন্সিল ও নগর ওয়ার্ড নির্বাহী কমিটি
৮. নগর থানা কাউন্সিল ও নগর থানা নির্বাহী কমিটি
৯.নগর কাউন্সিল ও নগর নির্বাহী কমিটি
১০.জাতীয় কাউন্সিল
১১.জাতীয় নির্বাহী কমিটি
১২.জাতীয় স্থায়ী কমিটি
১৩.পার্লামেন্টারী বোর্ড
১৪.পার্লামেন্টারী পার্টি
১৫.বিদেশে দলের শাখা
অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন
সহযোগী সংগঠন
বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন রয়েছে
.যুবদল
.ছাত্রদল
.সেচ্ছাসেবকদল
.মুক্তিযোদ্ধাদল
.শ্রমিকদল
.কৃষক দল
.মহিলাদল
.ওলামাদল
. মৎসজীবীদল
.মৎসজীবীদল
.সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)
পেশাজীবী সংগঠন
.বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম
.ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
.অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)


