বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি স্মার্ট ফোন কোম্পানি এবং মালিকের নাম

বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি স্মার্ট ফোন কোম্পানি এবং মালিকের নাম

আজ আমরা জানব বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি স্মার্ট ফোন কোম্পানি এবং মালিকের নাম সম্পর্কে। বর্তমান বিশ্বে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন স্মার্ট ফোন বাজারে লন্স করছে। যোগাযোগ অনলাইন ভিত্তিক কাজ ও কন্টেন্টের জন্য স্মার্ট ফোন প্রতিটি ক্ষেত্রকে নতুনভাবে গড়ে তুলেছে। বিশ্বব্যাপী স্মার্ট ফোনের বাজার বছরে ৫২ হাজার কোটি ডলার ছারিয়ে গেছে।

স্মার্ট ফোনের সবচেয়ে বড় বাজার এশিয়া- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। বিশ্বের স্মার্ট ফোনের মোট সরবরাহের ৪৯ শতাংশ আসে এই বাজার থেকে। ইউরোপ থেকে ১৮ শতাংশ এবং উত্তর আমেরিকা থেকে আসে ১৪ শতাংশ সরবরাহ। ফোনের বাজারে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাহিদা স্মার্ট ফোনের। স্মার্ট ফোনের বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর ব্যাপক দাপট রয়েছে।

(১) স্যামসাং ( দক্ষিন কোরিয়া )

বিশের ১ নম্বর স্মার্ট ফোন ব্র্যান্ড হচ্ছে দক্ষিন কোরিয়ার স্যামসাং। স্যামসাং কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লি বিয়ং-চুল। ১৯৩৮ সালে স্যামসাং কোম্পানি তাদের যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববাজারে স্যামসাং এর অবদান ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বের ৮০ টি দেশে স্যামসাং এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দক্ষিন কোরিয়ার বাইরে ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশে স্যামসাং এর ফোন তৈরির কারখানা রয়েছে।

স্যামসাং ফোন তৈরির কর্মী সংখ্যা বর্তমানে ২ লাখ ৬৬ হাজার। আকর্ষণীয় সব সুযোগ সুবিধা ও চমৎকার সব নকশার ফ্লাগসিপ ফোন গ্রাহকদের হাতে তুলে দেয় স্যামসাং। অ্যাপেলের সাথে যৌথ ভাবে ২০২৫ সালে শীর্ষ ব্র্যান্ডে নির্বাচিত হয়েছে স্যামসাং।

(২) অ্যাপল ( যুক্তরাষ্ট্র )

বিশ্বের সবচেয়ে ব্র্যান্ডভেলু ফোন অ্যাপল। অ্যাপল কোম্পানির মালিকের নাম স্টিভ জবস। অ্যাপল ১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববাজারে এই মার্কিন স্মার্ট ফোন ব্র্যান্ডের অবদান ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। অ্যাপল স্মার্ট ফোনের সবচেয়ে বড় সুবিধাগুলো হলো এর তথ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা গোপনীয়তা। অ্যাপল ফোনের নকশাও আধুনিক। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে অ্যাপল এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। স্যামসাং এর সাথে যৌথ ভাবে ২০২৫ সালে শীর্ষ ব্র্যান্ডে নির্বাচিত হয়েছে অ্যাপল।

(৩) শাওমি ( চীনা)

বর্তমান বাজারে চীনা ব্র্যান্ডের আধিপত্য সবচেয়ে বেশি। শাওমি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লি জুন। চীনা ব্র্যান্ড গুলোর মধ্যে শাওমি সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। শাওমি ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে। এই ফোনের সবচেয়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে চীনে। এছাড়া এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুলোতেও ব্যাপক হারে চাহিদা রয়েছে। এই ব্র্যান্ডের ফোনগুলো তুলনামূলক সল্পদামের চমৎকার নকশার ও দ্রুত চার্জ হয়। বৈশ্বিক বাজারে শাওমির অবদান ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

(৪) ভিভো ( চীন )

ভিভো হচ্ছে একটি চীনা ব্র্যান্ড। ভিভো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা শেন উই। ২০০৯ সালে ভিভো যাত্রা শুরু করে। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুলোতেও ব্যাপক হারে চাহিদা রয়েছে। ভিভো স্মার্ট ফোনের উন্নত ক্যামেরা, স্টাইলিশ নকশা ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের এবং তরুণদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় বিশ্ববাজারে ভিভোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ২০২৫ সালের ২য় প্রান্তিতে ভিভোর ২ কোটি ৭২ লাখ ফোন বাজারে এসেছে।

(৫) অপো ( চীন )

অপো হচ্ছে আরেকটি চীনা ব্র্যান্ড।অপো কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা টনি চেন গুয়াংডং। বাজারে এ ফোনের চাহিদা সাড়ে ৮ শতাংশ। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুলোতে এবং ইউরোপের দেশগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অপোর চমৎকার নকশা উন্নত মানের ক্যামেরা ফ্যাশন ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এই ফোনেও দ্রুত চার্জ হয়। যেসব ফোন ব্যবহারকারিদের ফোনে অনেক কাজ করতে হয় তাদের জন্য এই ফোনটি বাড়তি সুবিধা দেয়। ২০২৫ সালের ২য় প্রান্তিতে ভিভোর ২ কোটি ৫১ লক্ষ ফোন বাজারে এসেছে।

(৬) ওয়ানপ্লাস (চীন)

ওয়ানপ্লাস হচ্ছে আরেকটি চীনা স্মার্ট ফোন ব্র্যান্ড। ওয়ানপ্লাস কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা পিট লাউ এবং কার্ল পাই। ওয়ানপ্লাস ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববাজারে ওয়ানপ্লাস এর অবদান ৩ শতাংশ। ওয়ানপ্লাস স্মার্ট ফোনে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সফটওয়্যার থাকায় কোন জটিলতায় পরতে হয় না। প্রযুক্তি প্রেমীদের কাছে ওয়ানপ্লাস স্মার্ট ফোনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রিমিয়াম খরচ ছাড়াই এই ফোনে ফ্লাগসিপ সুবিধা পাওয়া যায়।

(৭) রিয়েলমি (চীন)

রিয়েলমি হচ্ছে আরেকটি চীনা স্মার্ট ফোন কোম্পানি। রিয়েলমি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লি বিংঝং এবং মাধব শেঠ। ২০১৮ সালে রিয়েলমি যাত্রা শুরু করে। রিয়েলমি ফোনের দাম তুলনামূলক সাশ্রয়ী। মোবাইল গামিং এর জন্য এই ফোনগুলো তৈরি করা হয়। এই কারনে তরুণদের কাছে এই ব্র্যান্ডের ফোনগুলো জনপ্রিয়। ২০২৪ সালে রিয়েলমির ১ কোটি ৪০ লাখ ফোন বাজারে এসেছে।

(৮) মটোরোলা (যুক্তরাষ্ট্র)

মটোরোলা ১৯২৮ সালে যাত্রা শুরু করে।মটোরোলা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ গ্যালভিন। বর্তমান বিশ্ববাজারে এর অবদান ৪ শতাংশ। এই একটি যুক্তরাষ্ট্র স্মার্ট ফোন কোম্পানি। সঠিক দামে অভিজ্ঞতা পেতে ক্রেতারা মটোরোলা স্মার্ট ফোনের দিকে ঝোঁকেন। ২০২৪ সালে মটোরোলা ১ কোটি ফোন বাজারে সরবরাহ করেন।

(৯) গুগল (যুক্তরাষ্ট্র)

গুগল আরেকটি যুক্তরাষ্ট্র স্মার্ট ফোন কোম্পানি। গুগল ফোন কোম্পানিরপ্রতিষ্ঠাতা পিচাই সুন্দররাজন। গুগল ফোনের বাজারে অবদান ২ শতাংশ। গুগল স্মার্ট ফোনের ক্যামেরা অনেক ভালো। এইকারনে ক্রেতাদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে এই স্মার্ট ফোন। সহজে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাবহারে সুবিধা পেতে গুগল স্মার্ট ফোনের দিকে ক্রেতাদের আগ্রহ। দীর্ঘমেয়াদী সফটওয়্যার আপডেট ও জটিলতা এড়াতে এই স্মার্ট ফোনের জুড়ি মেলা ভার। ২০২৪ সালে গুগলের ৬০ লাখ ফোন বাজারে এসেছে।

(১০) অনার (চীন)

অনার হচ্ছে আরেকটি চীনা স্মার্ট ফোন কোম্পানি।অনার কোম্পানির অধিকাংশ মালিকানাধীন। বিশ্ববাজারে এর অবদান ৩ শতাংশ। ২০১৩ সালে হুয়াওয়ের সাব-ব্র্যান্ড হিসাবে এই কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এই একটি স্বাধীন কোম্পানি। কমদামে অনেক সুবিধা দেওয়ার জন্য ক্রেতাদের কাছে এই ব্র্যান্ডের ফোন গুলো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

আরও দেখুন

ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার নিয়ম

মাত্র ১ মিনিটে সিম রেজিস্ট্রেশন কার নামে জানার উপায় 

2 Comments on “বিশ্বের শীর্ষ ১০ টি স্মার্ট ফোন কোম্পানি এবং মালিকের নাম”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *